তৈয়বুর রহমান কিশোর,বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছে। শনিবার (৮ জুলাই) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের বোয়ালমারী ও মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, গুনবহা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেম্বার সাহেব আলী  এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেম্বার মঞ্জুর হোসেনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর মধ্যে গত ২ জুন মঞ্জু মেম্বারের মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়েতে সাহেব আলী মেম্বারকে দাওয়াত না দেওয়ায় সে আবার তার লোকজন নিয়ে পিকনিক করে। এর জের ধরে শুক্রবার বিকেলে মঞ্জু মেম্বারের লোকজনকে মারধর করা হয়। শনিবার সকালে আবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আহতদের মধ্যে মঞ্জু গ্রুপের মঞ্জু মেম্বারকে (৫২) ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আনোয়ার (৫০), ওবায়দুল (৪৫), ইমরুল (৩৫), মিঠুন মোল্যাকে (৪৮) বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সাহেব আলী মেম্বারের লোকজনকে পাশের মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সাহেব আলী মেম্বার মাগুরার কোন একটি বাসা থেকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমার অবস্থা ভালোনা। আমার শরীরে তিনচারটি কোপ আছে, পিটানোর জখম আছে। মহম্মদপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে মাগুরার মধ্যে আছি। তিনি আরও বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। রাতে আর কিছু ঘটেনি। সকালে আমি রাস্তায় বের হয়ে দেখি মঞ্জু ও বাকিয়ারের সাথে লোকজন ঢালসড়কি নিয়ে আসছে। আমি পাশে দাড়িয়েছিলাম। এসেই আমার ওপর হামলা করে। তারপর ওদেরকে বা কারা মেরেছে আমি জানিনা।
মঞ্জু মেম্বারের গ্রুপের জিয়াউর রহমান জানান, মঞ্জু মেম্বারের মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় সাহেব আলী মেম্বার ও তার লোকজন ঘোট পাকাচ্ছিল। শুক্রবার ভেন্নাতলার হাটে গেলে আমাদের লোকজনকে মারধর করে। শনিবার সকালে তারা দল ধরে এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় মঞ্জু মেম্বার মারাত্বক আহত হয়।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, সাহেব আলী মেম্বার ও মঞ্জু মেম্বার গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। মঞ্জু মেম্বারের মেয়ের বিয়েতে সাহেব আলীকে দাওয়াত না দিলে তারা পিকনিক করে। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে শুক্রবার বিকেলে ঝামেলা হয়। শনিবার সকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দুইজনকে আটক করে থানায় এনেছে। যাচাইবাছাই এবং অভিযান চলছে। মঞ্জু মেম্বারের এক লোক হাতে লেখা একটি অভিযোগ এনেছিল। বলেছি কম্পিউটার কম্পোজ করে আনতে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।